ফুল,প্রজাপতির আর মধুর শহর যশোরে ভ্রমন
বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র মহাকবিমাইকেলের শহর যশোর।ভৈরবের তীরে এই সুপ্রাচীন বানিজ্যিক জনপদটি গড়ে উঠেছিল আজ থেকেপ্রায় সাড়ে তিনহাজার বছর পূর্বে।আচার ও ঐতিহ্যের দিক থেকে দেশের সবচে সমৃদ্ধ শররেরএকটি যশোর। খেজুরেরগুড়সহ রসের পিঠা, পায়েশ, জামতলারমিষ্টি, ধর্মতলার মালাই চা জনপদের মিষ্ঠান্ন ঐতিহ্য।এছাড়াবানিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ হয় ফুল, মধু। যশোরের নকশীকাঁথা দেশেও দেশের বাইরে সমান ভাবে সমাদৃত। দেশের গুরুত্বপূর্ণ বেনাপোল স্থল বন্দর এইজেলাতেই অবস্থিত।
যশোর ভ্রমনের জন্য যে দশর্নীয় স্থান গুলি আপনারভ্রমণ তালিকায় থাকতে পারে __
১। মাইকেল মধুসূদন দত্তের পৈত্রিক বাড়ী, যাদুঘর __মধুপল্লী
যশোর জেলা সদর হতে সড়ক পথে ৪৫ কিলোমিটার/ চল্লিশটাকা বাস দূরত্বে কেশবপুরউপজেলার সাগরদাঁড়িতে অবস্থিত অমিত্রাক্ষর ছন্দের জনকমাইকেল মধুসূদনদত্তের পৈত্রিক বাড়ি যা বর্তমানে প্রত্নতত্ত্বনিদর্র্শন হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। মহাকবির পৈত্রিক বাড়ী ও তাঁর বাল্যকালেরস্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহের পাশাপাশি বাড়িতে গড়ে তোলা হয়েছে জেলা পরিষদের ডাকবাংলো,মধুসূদন লাইব্রের, যাদুঘর, কবিরমুরাল। এবং পুরো জায়গাটার নামকরণ করা হয়েছে মধুপল্লী নামে।
মধুপল্লী সময়সূচী : মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি(Michael Madhusudan Dutta Memorial House) এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এবং অক্টোবর থেকে মার্চ মাস প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্তদর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। প্রতি সাপ্তাহের রবিবার এবং সকল সরকারী ছুটির দিনেমধুপল্লী সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে।দেশি পর্যটকের জন্য টিকেট মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে১০ টাকা এবং বিদেশি পর্যটকদের জন্য ১০০ টাকা।
২/হনুমান গ্রাম,কেশবপুর
যশোর জেলা সদর থেকে মাত্র বত্রিশ কিলো দূরেঅবস্থিত কেশবপুর যা হনুমান গ্রাম বলে পরিচিত স্থানীয় দের কাছে।এই গ্রামে প্রবেশকরলেই আপনি দেখতে পাবেন বিরল প্রজাতির শত শত কালোমুখো হনুমান খুবসাবলীল ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।পরিবেশবিদ রা বলছেন সংখ্যার হিসেবে এটি চারশ।মাত্র ২০/৩০বছর আগেও এই গ্রামে কয়েক হাজার হনুমানের বসবাস ছিল। বিজ্ঞানীরা বলছেন পরিবেশ গত পরিবর্তন, পর্যাপ্ত বৃক্ষের অভাব, খাবার ও আশ্রয়ের অভাবে দিনদিন হনুমান এর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। পর্যটক হিসেবে এমন অভয়ারণ্যে বিরল প্রজাতির এত এত হনুমানদেখার সুযোগ টি হাতছাড়া করা উচিত হবেনা।
৩/যশোর কালেক্টরেট পার্ক
যশোর জেলার অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র এই যশোরকালেক্টরপার্ক। কালেক্টরেট ভবনের পাশে ভৈরব নদীর তীরে গড়ে তোলাহয়েছে যশোর কালেক্টরেট পার্ক। এর ঠিক পাশেই রয়েছে ফ্লাওয়ার পার্ক যেখানে অসংখ্যপ্রজাতির ফুলের চাষ হয়। কালেক্টর পার্ক জেলা সদর থেকে রিকশাদূরত্বে।আপনি চাইলে শহরথেকে পায়ে হেঁটেও যেতে পারেন।
৪/চাঁচড়া শিবমন্দির
এই শহরের সবচে পুরানা ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শনেরএকটি এই চাঁচড়া শিব মন্দির।প্রত্নতত্ত্ববিভাগের হিসেব অনুযায়ী ১৬৯৬ খ্রিষ্টাব্দে চাঁচড়ার রাজামনোহর রায় এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন।।আটচালা বিশিষ্ট ৩২৪ বছর পুরানা এই চাঁচড়াশিবমন্দির বাংলাদেশ প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর সংরক্ষিত স্থাপনা হিসেবে তালিকাভুক্ত হবারপর পুরানা আদলে কিছু কিছু জিনিস পুনঃনির্মাণ করা হয়।প্রতি অমাবস্যা, পূর্নিমায় মন্দিরের বিশেষ অনুষ্ঠান ছাড়াও সারাবছর বিভিন্ন উৎসবেদূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন।জায়গা টি একই সংগে ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ধর্মীয় গুরুত্ব বহন করে।
৫/গদাখালী ফুলের বাগান,বাজার
ফুল ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াকঠিন।আপনি যদি ফুল ভালবাসেন আপনার অবশ্যই একবার যাওয়া উচিত ফুলের রাজধানীগদাখালীতে।দেশের সর্ববৃহৎ ফুলের পাইকারি বাজার টি বসে এই গদাখালীতেই । যশোরের ঝিকরগাছা ও শার্শা থানার৯০ টি গ্রামের প্রায়চার হাজার একরের বিস্তৃত ভূমি জুড়ে চাষ হয় কেবল ফুলের।যে ফুল সারা দেশের চাহিদামিটিয়ে বিদেশে ও রপ্তানি হয়। দিগন্ত জোড়া জমিতে চাষ করা হয় রজনীগন্ধা, গোলাপ, গ্লাডিওল্যাস,জারবেরা,কসমস,ডেইজি,জিপসি আর গাঁদা ফুল। আপনি যদি বেড়াতে যান গদাখালী ফুলের বাগানে এত বিস্তৃত ভূমি পায়ে হেটে পার হওয়াবেশ সময় সাপেক্ষ।চাইলে ভ্যান ভাড়া করে ঘুরে দেখতে পারেন এই ফুলের বাগান।ভাড়া নিতেপারে ১০০/১৫০ টাকা। ফুলেরসমারোহের ।সাথে প্রজাপতির ছুটোছুট, মৌমাছির গুঞ্জন।যেন কোনস্বর্গদৃশ্য।
৬/ভাসমান সেতু,নয়াগ্রাম
যশোরের নয়াগ্রামের এই সেতু কেবল দৃষ্টিনন্দন ইনয় বরং মানুষের সামগ্রিক ইচ্ছাশক্ত, একাত্মতার দৃষ্টান্ত ও।নয়টি গ্রামের মাত্র ষাট জনমানুষের জমানো টাকায় এবং গ্রামবাসীর সেচ্ছাশ্রমে গড়ে উঠেছে প্লাস্টিকের ড্রাম, লোহার অ্যাঙ্গেল ও শিট দিয়ে নির্মিত এই সেতুটি। নীল ও লাল রঙেরদৃষ্টিনন্দন হাজারফুট দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটেআসেন।মাত্র ৫ টাকার টিকেট কেটে ঘুরে দেখতে পারেন যশোরের মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জএলাকায় ঝাঁপা বাঁওড়ে অবস্থিত সেতুটি।
৭/কেশবপুর ভরত দেওল/ভরত ভায়না বৌদ্ধমন্দির
বলা হয়ে থাকে ভরত ভায়না মন্দির দক্ষিণ বঙ্গেরএকমাত্র আদি ঐতিহাসিক যুগের স্থাপনা।খুলনা-যশোর সীমান্তে কেশবপুর উপজেলার ভদ্রানদীর পশ্চিম তীরে ভরত ভায়না গ্রাম।যেখানে সবুজ গাছগাছাল, পাখির কলোরব পেরিয়ে মাথা উঁচুকরে আছে প্রায় কালের সাক্ষী দেড় হাজার বছরের এক পুরার্কীর্তি।প্রত্নতত্ত্ববিশেষজ্ঞদের মতে এটিখ্রিষ্টীয় তিন থেকে ছয় শতকে নির্মিত একটি মন্দির।অর্থাৎদেউলটি গুপ্ত যুগের খ্রিষ্টীয় ২য় শতকে নির্মিত হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। ১৯২৩সালের ১০ জানুয়ারী তদানীন্তন সরকার এটাকে পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণাকরেন।।স্থানীয়দের কাছে জায়গাটি ভরতের দেউল, ভরত রাজার দেউল নামে পরিচিত।ইতিহাস আর ঐতিহ্যের প্রতীক ভরতের দেউলের একাংশআগলে রেখছে বিরাট এক প্রাচীন বটবৃক্ষ। অন্য পাশ দিয়ে নিরবিলি হয়ে বয়ে চলেছে ভদ্রানদী। সবকিছু মিলিয়ে ভরতের দেউলের মনোরম এবং প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলীএবং ঐতিহ্যগত গুরুত্ব আপনাকে মুগ্ধ করবে।
৮/বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ এর মাজার
স্বাধীন বাংলাদেশে সর্বপ্রথম নিজেদের স্বাধীন ওশত্রুমুক্তর ঘোষণা দেয়া সাহসী যোদ্ধাদের শহর যশোর। স্বাধীনতার সংগ্রামে যে সাতজনবীরশ্রেষ্ঠ রয়েছেন তাদের একজন বীরশ্রেষ্ঠ নূরমোহাম্মদ শেখের মাজার এই যশোর।সাহসীবীরত্বপূর্ণ সম্মুখযুদ্ধেশহীদ হন এই মুক্তিযোদ্ধা।এই অসম অবিশ্বাস্য সাহসী শহীদের স্মৃতির প্রতি সম্মান রেখে এইমাজার। যশোর বেনাপোল সড়ক থেকে শার্শা উপজেলা থেকে উত্তরের রাস্তা ধরে ডিহিইউনিয়নের যাওয়ার পরে রিকশা করে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের মাজারে পৌছানো যাবে।
ঢাকা থেকে যশোর কিংবা যশোর হতে ঢাকা ভ্রমনের এইদীর্ঘ যাত্রাকে সহজ করতে আছে তৎপর বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স গুলি।বিমান জার্নিতে মনেরাখতে হবে,বিমানের উড্ডয়নের সিডিউল ও ভাড়া আবহাওয়া,জরুরী অবস্থা ইত্যাদির উপর নির্ভর কয়রে পরিবর্তন হতেপারে।এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিমান কোম্পানির সিদ্ধান্ত ই শেষ সিদ্ধান্ত ।আপনাদেরযাতায়াত কে সুন্দর ,নিরবিচ্ছিন্ন ও নিরাপদ করতে দুটি এয়ারলাইন্সের সময়সূচি দেয়াহল।বর্তমান অবস্থা কে মাথায় রেখে বিমান কোম্পানিগুলি ৩৫% সিট ফাঁকা রেখে সর্বচ্চোসাবধানতা অবলম্বন করে ফ্লাই করেন। তাই নিশ্চিন্ত, নিরাপদ আরামদায়ক ভ্রমনেরনিশ্চয়তা নিয়ে দ্বিধাহীন হয়ে ঘুরে আসতে ফুল,প্রজাপতির শহর যশোর থেকে, এলেন্সগিন্সবার্গের সেপ্টেম্বর অন যশোর রোডের যশোর থেকে।বিমানের টিকেট করতে আপনার দরকার হবে একটি ভোটারআইডি কাডের ফটোকপি।
নভএয়ারের ভাড়া শুরু হয় ২৯৯৯টাকা থেকে৭১০০ টাকাক্লাসভেদে ।এই রুটে প্রতিদিন চারটি বিমান আসা যাওয়া করে।
DHAKA – JASHORE
Flight No Departure Arrival Days of Operation
VQ941 9:00 9:40 Daily
VQ945 13:30 14:10 Daily
VQ947 17:00 17:40 Daily
VQ951 19:00 19:40 Daily
JASHORE – DHAKA
Flight No Departure Arrival Days of Operation
VQ942 10:10 10:50 Daily
VQ946 14:40 15:20 Daily
VQ948 18:10 18:50 Daily
VQ952 20:10 20:50 Daily
অন্যদিকেইউএস বাংলার ভাড়া শুরু হয় ২৬৯৯ টাকাথেকে ৫৬০০ টাকা ।ইউএস বাংলা ও বিমানপথের গুরুত্বপূর্ণ রুটের জন্যবারদ্দ রেখেছে তাঁদের চারটি ফ্লাইট।
DHAKA – JASHORE
Flight No Departure Arrival Days of Operation
BS123 08.30AM 09.15PM Daily
BS125 12.00PM 12.45PM Daily
BS127 03.30PM 04.15PM Daily
BS135 06.30PM 07.15PM Daily
JASHORE – DHAKA
Flight No Departure Arrival Days of Operation
BS124 09.45AM 10.25AM Daily
BS126 01.15PM 01.55PM Daily
BS128 04.45PM 05.25PM Daily
BS135 07.45PM 08.25PM Daily
“ Mr.“
555
“ Mr.“
555
“ Mr.“
555
“ Mr.“
555
“ Mr.“
555